ক্লাস ওয়ানে আমাকে ভর্তি করা হবে। বাবা আমাকে নিয়ে চললেন টি.অ্যান্ড.টি সরকারী আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে (Ahem) – বালিকা বিদ্যালয় হলেও আসলে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত ছেলেদের পড়তে দিত। বাসার পাশে হওয়ায় আর আমার আরো দুটো বোন একই স্কুলে পড়ায় এটাই হল আমার জন্য উপযুক্ত জায়গা, মা বাবা আর বোনেরা ঠিক করেছে।
আমাকে অনেকবার করে নামতা মুখস্ত বলতে হল মার কাছে রওনা দেবার আগে। আরো কি কি যেন বলতে হয়েছিল। স্কুলে ম্যাডাম এর রুমে আমাকে একা একা ঢুকায় দিয়ে বাবা বাইরে বসে আছে। ম্যাডাম একবার জিজ্ঞেস করেন নামতা বলতে, একবার এবিসিডি বলতে। তখন তো আর প্লে, কেজি এগুলা ছিল না, অন্তত আমাদের মত নিম্ন মধ্যবিত্য পরিবারের জন্য। সরকারী স্কুলে ক্লাস ওয়ানে বোধহয় এগুলোই জিজ্ঞেস করত। আমি ভয়ে ভয়ে কাদোঁ কাদোঁ মুখে সব বললাম। ম্যাডাম কিছুক্ষন পরে বাবাকে ডেকে কি যেন বললেন।
বাসায় ফিরতে ফিরতে বাবা জানালো যে আমার ভর্তি হয়ে গেছে, তবে ক্লাস ওয়ানে না, টুতে। আমার মত ধেড়ে বাচ্চার নাকি ক্লাস ওয়ানে পড়া ঠিক হবে না। রোল দিয়েছে ১২০। আমি তো মহা খুশি, ১২০ – কেন যে ১২০০ হল না। বাসায় এসে দেখি মা মাছ কাটছে, মাকে বললাম – জান মা, আমার রোল না ১২০। মা তখন বুঝিয়ে দিল যে রোল যত কম হয় ততই ভাল।
পরেরদিন থেকে ক্লাস, মহা টেনশনে ছিলাম আমি । বাসায় আমার বোনেরা সারাক্ষন আমাকে বাসায় আটকায় রাখত, বাইরে যেতে চাইলে ভয় দেখাত ছেলেধরার। এই বুঝি ছেলেধরা নিয়ে যাবে, এই ভয়ে আমি তটস্থ থাকতাম। পরের দিন স্কুলে গেলে কি হবে, ক্লাসে তো আমার বোনরা থাকবে না, যদি ছেলেধরা ধরে নিয়ে যায় এই চিন্তায় আমি তখন ব্যাস্ত।
boss dekhi choto kaal thekei boss manush, ek bare class 2 te 🙂
সুন্দর শৈশবের কাহিনী 🙂
asha kori part-2 te bolben kibhabe kane dhore ut bosh korsilen 😛
@junal – 😉
আপনার এত কিছু মনে আছে কিভাবে ?? জটীল 🙂
চমৎকার যে ঐ দিনগুলি মনে আছে…
আমি শত চেষ্টা করলেও বলতে পারবো না। শুধু আমার মনে আছে আমাদের (আমি আর ভাইয়া) স্কুলে নিয়ে যাবার জন্য রিক্সা ঠিক করা ছিলো, জমিল-এর রিক্সা। সকালে যখন রিক্সায় তুলে দেয়া হতো তখন আমি খুব কাঁদতাম আর বলতাম এই জমিল রিক্সা টা থামা না, আম্মুকে একটু ধরবো.. আর ভাইয়া আমাকে সিটের মধ্যে টেনে ধরে রাখতো।
পরে আম্মু আমাকে নিয়ে স্কুলে দিয়ে+নিয়ে আসতো। আমার শর্ত ছিলো আমার জন্য বাহিরে বসে থাকতে হবে। একদিন দেখি আম্মুর শাড়ি বদল হয়ে গেছে, মানে আম্মু আমার জন্য বাহিরে বসে থাকে না, খুব জেদ করেছিলাম সেদিন…
🙂
হ্যাঁ সবারই তো মনে থাকে, কেন ইমরান তোমার মনে নাই?
@অমি – তুমিও লেখা শুরু কর। আমি আস্তে আস্তে লেখা চালাতে থাকব
৪২০ হলে খারাপ হতো না 😛
ছোট বেলার কথা গুলো মনে পড়ে আমারও…।
প্রথম আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির পাশের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু প্রথম দিনই বেশি আনন্দে অন্য একজনের সাথে পাল্লা দিয়ে আগে আগে স্কুলে যেতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পা কেটে গেলো। অমনি আমার ছুঁতো ঐ স্কুলে পড়বো না, আমার পা কেটে দিছে। হে হে…।
পরে কিছু দিন পর বা যে স্কুলে ছিলেন সেখানে ভর্তি করে দেন।
যতদূর মনে পরে, আমি মোটামুটি “গাব” প্রক্রিতির ছিলাম…হেহ হেহ !
@manchu : jotils! 😀
আমার মাথায় ওগুলো আসা শুরু করেনি। আরও পরে হয়তো আসবে 🙂
আমাকে আজিমপুর গার্লস হাই স্কুলে ক্লাস ওয়ানে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। স্কুলে যাওয়ার আনন্দে ভর্তি পরিক্ষা খুব ভাল হয়ে গেল। আমাকে ক্লাস টুতে ভর্তি করা হল। কিন্তু আমার মন খারাপ হয়ে গেল। বান্ধবিরা সবাই ওয়ানে আর আমি একা টুতে পড়ব।